Dec 25, 2006

আমাদের সমবায় সমিতি






হাইস্কুলে র্ভতি হওয়াটা সব মানুষের জন্য একটা মোড়। অজানা সব নতুন মুখের ভীড়ে, বন্ধু খুঁজে পাওয়া।চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে আমরা একই স্কুলের বেশ কয়েকজন র্ভতি হয়েছিলাম। হাই স্কুলে দূরে হওয়ার সুবাদে স্কুল যাওয়ার জন্য রিকশা ভাড়া পাওয়া যেত। আপ এন্ড ডাউন ৬/৮ টাকা। তবে মাসখানেক বাদে সেটা শুধু আপ অর ডাউনে নেমে আসল।মানে ৪ টাকা। ঘরের আয় অনুযায়ী বরাদ্দ, বাট এই টাকাই আমার জন্য অনেক।
এর আগে প্রাইমারি স্কুল ছিল নাকের ডগায়, টাকার মুখ ফলে কোনো দিন দেখিনি। শুধু ঈদের দিন নানি একটা কড়কড়ে পাঁচ টাকার নোট দিত। ঈদের দিন ঐ টাকা না পাওয়া র্পযন্ত মন খুব অস্থির থাকত। নিজেকে আবার খুব র্স্বাথপর মনে হত, মনে হত আমি নানীকে ভালবাসিনা, ঐ টাকা ভালবাসি।

নানির সাথে ভাব আমার ভালই ছিল।একদিন নানিকে নিয়ে রিকশায় করে বাসায় আসছি, আমি বললাম 'হুড তুলে দিই নানি '।
' দে , কেউ আবার দেখলে বলবে বয়ফ্রেন্ড নিয়ে যাচ্ছি '। আরেকবার তখন কলেজে পড়ি উনাকে বললাম চলেন, বলল ' গয়না নিব ' । আমি বলি ' কেন ?' । উনি বলল ' আমরা পালাব না, হাত ধরাধরি করে, ফেরি করে আরিচা ঘাট দিয়ে '। আমার মনে পড়লে এখনো হাসি। পঁচাত্তর এর উপর বয়স তখন, একবার বাসায় আমার র্ভাসিটির একগাদা বন্ধু এসেছে। নানিকে বললাম আসেন পরিচয় করিয়ে দিই । নানী মেজআপাকে বলল '' আমাকে একটু লিপস্টিক দিয়ে দে না। এতগুলো ইয়ং ছেলে আসছে, একটু সেজে গুজে যাবো না ।'

আমার নানীর নাতি-নাতনী গুলো একটাও উনার রসবোধ বা প্রাঞ্জলতা পায়নি। নিজের স্বকীয়তা
তৈরি করতে গিয়ে সবাই জীবনের মানে ভূলে গেছে।

কোথা থেকে কোথায় চলে গেলাম। অবশ্য অসুবিধা নেই, আমার লিখা এত কম লোক পড়ে যে, আলু জায়গায় মূলা লিখলেও পাবলিক টের পাবেনা।
স্কুলে যেতাম হেঁটে, জোর কদমে নওজওয়ান। আর টাকা জমতো টিনের বাক্সে। রেয়াজ্জুদ্দিন বাজারের ভিতর দিয়ে, কাগজের গন্ধ আর প্লাস্টিক এর খেলনার টুং টাং পার হয়ে ক্ষিপ্র গতিতে ছুটে চলেছি আমি আর র্পাথ। কে কার আগে ছুটতে পারে। তখন এক আজব অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল হাঁটার সময় দোকানের নাম মুখস্থ করা।পাঁচ বছর হেটেছি ঐ রাস্তায়।


আমি, র্পাথ আর আরিফ তিন দোস্ত মিলে সমবায় খুললাম। একার টাকায় বই কেনা যায় না। প্রতি সপ্তাহে দশ টাকা, প্রতি জন। তখন ক্লাস সিক্সে আমরা। প্রতি সপ্তাহে ৩০, মাসে ১২০। টাকা হুহু করে বাড়তে লাগল। এখন বিলিনিয়ার হলে আমি মনে হয় তখনকার আনন্দ পাব। আমাদের প্রথম দিককার বই ছিল 'টিনটিন'।আনন্দ পাবলির্শাস থেকে বের হত একটা ৮০ টাকা। হিসাবের খাতা বাই রোটেশন মেইনটেইন হত। তবে বেশীর ভাগ সময় আরিফ দেখাশুনা করত, বড়লোকের পোলা। পুরো হাইস্কুল জীবন চলেছে সমবায়।



যা হোক ভাই এবং বোনেরা আসল কথায় আসি, আপ্তবাক্য হিসেবে মনে রাখবেন, '' সমবায়ে বই কিনতে পারেন, কিন্তু প্রেম করতে যাবেন না'' । তাহলে আম এবং ছালা দুটোই যাবে। বন্ধু ও যাবে, বন্ধুত্ব ও যাবে।


=======================================
৬'ই জুন,২০০৬
রাত ১২:৩৭
কলাম্বিয়া।

Dec 22, 2006

একটি শালীন নৃত্য

গতকাল অমুক ভাইয়ের ছেলের গায়ে হলুদে গিয়েছিআমেরিকায় বাংলাদেশী প্রোগ্রাম, এলাহী ব্যাপারআর আমার মত নাদানের জন্য তো কথাই নেইবাংলাদেশী ছেলের সাথে ইন্ডিয়ান মেয়ের বিয়েমালটিকালচারাল শোএকটা বাংলা গানতো তিনটা হিন্দি গানএকজন রবীন্দ্র সংগীত গাইল, আমার পাশে রাশেদ ঘুমায় আরকিআমাদের ছাত্ররা ''যমুনার জল দেখতে কালো '' অনেক অনুরোধেও গায়েন কি দিয়ে গাওয়াতে পারলেন নাবেচারার দোষ কি মিডি ফাইল না থাকলে কি করবে বেচারা হিন্দি গান গিলতে গিলতে দেখি ঘোষণা হল অমুক নাচবে '' কাজরা রে '' ঢংয়ে ঐশ্বরিয়ার সুপারহিট গানা

যে মেয়েটি নাচবে তার বয়স বেশি হবে নাএই সম্ভবত ২২-২৫ ওর জামাইটি ২৬-২৭ বেশ অমায়িক এবং ভাল ছেলে বিয়ের বয়েস এখনো হয়তো দু বছর হয়নি বাচ্চার নতুন খেলনা পেলে যেমন চার্ম থাকে,এই বয়সের বিয়েতেসেটা থাকেএকই সাথে সারা দিন থাকে তবুও কোথাও বেড়াতে গেলে দূর থেকে এক পলকের ভালবাসা বিনিময় চোখে চোখেএমন একটা সময় যখন প্রিয় মানুষের থুথু ফেলার স্টাইল টাও মনে হয় অভিনব যাই হোক মেয়েটা নাচতে আসল'' ম্যানে কলিজা রাখ দিয়া .....'' বলা মাত্র , যে রকম একটা ঝাকানি দিলেনযাই হোক ওর চোখ পড়ে আমি নিশ্চিত ছিলাম, এই নাচটা দিচ্ছিল ওর জামাই বাবাজি কে উদ্দেশ্য করেএটা তাদের একান্ত রোমান্স, আমরা সে বিষয়ে না যাই

বিষয়টা হচ্ছে র্দশক নিয়েআমি বেল্লিক মানুষপৃ থিবীতে খুব কম বিষয় আছে যেটাতে আমার রুচি নেইকথা হচ্ছে তাদের নিয়ে যারা অতি অল্পতেই দেশ রসাতলে গেল, সব বরবাদ গেল তাদের নিয়েএকটু আগে এশার নামাজ ড়া নিয়ে তোড়জোড় করলেননামাজ কে ক্রিটিসাইজ করার জন্য বলছি নাআমি কেন নামাজ পড়ি না এ নিয়ে তারা ইতিমধ্যে অভিসর্ন্দভ নামিয়ে ফেলেছেনআজকে একজন বললেন তোমার মোরালিটি নাই, তুমি নামাজ পড়না পাঁচ ওয়াক্ত যৌবনের তেজ স্থৈর্যও শিখিয়েছে , তাই কিছু বলিনিওরা মোরালিটি ডিপ ফ্রিজে রাখেযখন খুল্লাম খুল্লা দেখার দরকার হয় তখন ডিপ ফ্রিজযখন দরকার বের করে চেখে নেয়, আবার ফ্রিজে বুফে তে গেলে হুংকার দিয়ে দেখিয়ে দেয়, এটা শুকরের মাংসকে কার আগে দেখাতে পারে , তাহলেই তো প্রমাণ হয়ে গেল আমি পাককা মুসলিম

যা বলছিলাম নাচ, সবাই দেখছে একটি মানসিক নাবালিকা নিজেকে উপস্থাপন করছে, সবাই হাততালি দিচ্ছে সকল পেশা এবং শ্রেনীর এবং সকল বয়সের মানুষ আছেএর মধ্যে আবার অনেকেই আছে যারা ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়ে, ইরাকে কি হবে ভেবে , আমি নামাজ পড়ি না ভেবে, দেশে ইন্ডিয়ান সংস্কৃতির আগ্রাসনের কথা ভেবে

এই হচ্ছে আমাদের শালীনতা, পরের বউ খেমটা নাচ দিলে অসুবিধা নাই , নিজের বউ ঘোমটা দিতে হবে

রিকশা করে রাজমণির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আড়চোখে একটু দেখতে হবে ময়ূরীকেকিন্তু ইউনির্ভাসিটি গিয়ে ফতুয়া আর জিন্স পরা মেয়ে দেখলে বলতে হবে, রেপ হবে না কেন আগ বাড়িয়ে বুক দেখাচ্ছেএই হচ্ছে আমাদের হোম মেইড শালীনতা

Dec 21, 2006

অভিযোজন

ক্রিসমাসের ছুটি শুরু হয়ে গেছে , এখন ক্যাম্পাসে পাতা ঝরার আওয়াজ ও স্পষ্ট শোনা যায়যদিও সারা বছর চার দেয়ালের মধ্যে কাটানো হয়, বাইরে খুব বেশী যাওয়া হয় না। তবুও ক্যাম্পাসের এই ফাঁকা ভাবটা অসহ্য লাগে। এর মধ্যে যদি দেখা যায় রুমমেট চলে গেছে অন্য কোথাও তখন আরো খারাপ লাগে। মানুষের সম্পর্কের সূতো গুলি খুব টানটান। যার সাথে গোটা সপ্তাহে সত্তুর মিনিট কথা হয় না, তার অনুপস্থিতিও খুব বাজে। প্রবাস শব্দটাকে মেলে ধরলে হবে প্রকৃষ্ট যে বসবাস। এই লাইনটা প্রবাস শব্দটাকে মোটেই ধারণ করে না। প্রবাস অনেক বেশী নির্জন এবং শীতল শব্দ।

পরিবারের বাইরে থাকার অভিজ্ঞতা অনেক পুরোনো। সেটাও অনেকটা একা থাকার সময়। কিন্তু সে সময়টা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক সময়। ভীষণ স্বর্ণালী সময়। পরিবারের কাছ থেকে দূরে থাকলেও একা থাকা হয়নি। দেশের বাইরে
সবচেয়ে খারাপ যে বিষয়টা আমার লেগেছিলো প্রথম সেটা হচ্ছে, তীব্র অপরিচিত একটা পরিবেশ। চারিদিকে এত সবুজ, অথচ এ সবুজ যেন আমার নয়। একটা গাছের নাম জানিনা। একটা পাখির নাম জানিনা। আমি যেখানে থাকি সেটা ভীষণ
সবুজে ভরপুর একটা জায়গা, অথচ এই সবুজ মনে কোন দ্যেতনা সৃষ্টি করেনা। আস্তে আস্তে বিষয়গুলো কেটে যায়, অভিযোজিত হয়ে পড়ি। কোথায় যেন ঠিকই একটা কিন্তু থেকে যায়।

আমাদের জীবনের সেরা সময়গুলো আমরা অভিযোজন প্রক্রিয়ায় কাটিয়ে দিই। এক সময় আবিষ্কার করি আমরা অভিযোজনের অপর নামই জীবন ধরে নিয়েছি।

Dec 11, 2006

প্রমিত বাংলা


একটু আগে জাতীয় পতাকা বের করলাম স্যুটকেসের মধ্যে থেকে। মাঝারি সাইজের পতাকা। আসার সময় আম্মা ব্যাগে গুঁজে দিয়েছিল। কিউবিকলের দেয়ালে লাগাবো , হার্ড ড্রাইভ ম্যাগনেট দিয়ে। মেরুন কালারের দরজায় লাল সবুজের পতাকা আশা করা যায় ভালই লাগবে। আমি যখন এখানে প্রথম আসি , আমার প্রফেসর অন্য এক প্রফেসরের সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিতে গিয়ে বলেছিল,
ও বাংলাদেশ থেকে এসেছে। সেই প্রফেসর জিজ্ঞাসা
করেছিলেন, '' তোমার ভাষা কি ?''
'' বেঙ্গলি ''
সাথে আমার প্রফেসর যোগ করে দিলেন ,
''They value their language more than their religion, isn't it iftekhar ''
আমার কানে কথাটা বাজে , বারবার ।

ভাষার সঠিক মর্যাদা রাখতে পারছিতো, প্রমিত উচচারণ , সঠিক বানান, এবং অপ্রচলিত শব্দকে হারিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা। সঠিক ভাবে করছিতো আমার প্রার্থনা ।

একটি আস্ত ছিনতাইয়ের মস্ত বিবরণী -২


ছিনতাই এর পরের অনুভূতি খুব ভয়ংকর টাকা যাওয়াটা খুব বড় বিষয় না আমার একধরনের অসহায়ত্বের অনুভূতি হয়েছিল স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক আমি , আমার পুরো মাসের ইনকামের টাকা একজন এসে নিয়ে নিল আমি কিছু করতে পারলাম না এই কিছু করতে না পারার অনুভূতি কি পীড়াদায়ক আমি লিখে বোঝাতে পারবো না আমার কখনো এরকম হয়নি আমার সাথে থাকা বান্ধবী কে টিজ করেছে , আমি ভি. আই.পি রোডে শেরাটনের সামনে কলার ধরে ঝাকাইছি আমার বোনের ব্যাগ টান দিয়ে নিয়ে গেল , ট্যাক্সির পেছনে আধা কিলোমিটার দৌড়িয়েছিব্যাগ উদ্ধার করতে পারি নাই , বাট আই ট্রায়েড মাই বেস্ট আমার কাছ থেকে নিয়ে গেল আমি একটা কাঠ পুতলার মত দাড়িয়ে রইলাম আমার মনে হয়েছিল , যদি আমার মাকে বলি , আমি কিছু করতে পারি নাই আম্মা উনি বলবে তুই ঘর থেকে বাইর হয়া যাIt’s a feeling of anguishআমি যদি মন্ত্রির পোলা হইতাম, এই টাকা-মোবাইল উদ্ধার করতে এক ঘন্টা লাগত নিজেকে ক্ষমতাহীন , পঙ্গু অনুভব করেছিলাম তখন

কি করি ,আমার দোস্তর (অমি) সাথে আলাপ করলাম, ও বলল, 'থানায় কেস করতে হবে'

আমি বললাম 'লাভ কি, শুধু শুধু সময় নষ্ট ' ও যেটা বলল সেটা আমার জীবনে আমি ভুলবনা

' তুমি তোমার জিনিস ফেরত পাবা না আমি জানি , কেস করে লাভ নাই , আমি জানি কিন্তু তুমি যদি আজকে কিছু না করে চুপচাপ বাসায় চলে যাও , আজ থেকে দশ বছর বাদে কি বলবা নিজেকে তুমি তোমার সার্মথ্যের মধ্যে যতটুকু সম্ভব , ততটুকু প্রতিবাদ ও করো নাই প্রতিবাদ এমন একটা বিষয় , যেটা সম্ভব কি, অসম্ভব চিন্তা করে করা হয় না এটা করতে হয় নিজেকে সমুন্নত রাখার জন্য '

যাও এবার খই ভাজতে ধানমন্ডি থানা মনে হলো যেন কাক-বক-শকুন সব একত্র হইছে কিচির মিচির ও. সি নাই , স্যার জগিং এ গেছে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর , তিনি আসলেন একজন এস. আই কে বললেন বিষয়টা দেখতে আমার বন্ধু মুখে হম্বি-তম্বি ,কিন্তু ওইখানে গিয়া দেখি লাচ্ছা সেমাই হয়া গেছে এস. আই (নাম ভুলে গেছি ) সাহেব বেশ ভাল, ইয়ং পরীবাগ যাওয়া হল

রাস্তায় দাড়িয়ে ছিনতাইয়ের অনুপুংখ র্বণনা দিলামকেমনে নিল , কি নিল , নিয়ে ওরা কোনদিকে গেল এর মধ্যে হাবিলদার (মনে হয়) একজন জিজ্ঞাসা করতে লাগল,

'' কোন মডেলের সেট ''

'' নোকিয়া ৩১০০''

'' কত টাকা ''

আমার ধারণা হওয়া শুরু হল , লাভের বখরায় যাতে কম না পড়ে , তাই এত জিজ্ঞাসাবাদ

এদিকে এস. আই সাহেব , তার কাহিনী বলা , শুরু করেছেন আমার দোস্ত ফোনে গুটুর - গুটুর শুরু করছে প্রেমিকার সাথে

'' ভাই জানেন পুলিশের চাকরী নেওয়ার পর থেকে বিয়ে শাদীতে যাই না , আত্মীয় স্বজনের লোকজন কেমন করে জানি দেখে আমি অমুকের পোলা , বা অমুকের স্বামী বা অমুকের বাপ হিসেবে দেখে না পুলিশ হিসেবে দেখে গত সাত মাসে দুইটা পোস্টিং বাচ্চাটার বয়স ৩ বছর , কতদিন বউ-বাচ্চারে দেখিনা ''

যাই হোক , শেষ র্পযন্ত ওই এস. আই বললেন , ইর্স্টান প্লাজার সামনে যে আইল্যান্ড তার একপাশ পরে ধানমন্ডি থানায় আরেক পাশ রমনা থানায় আমারটা পরছে রমনা থানায় বোঝো ল্যাঠা এবার রমনা থানা থেকে একটা গাড়ি আসল এর মধ্যে লোকজন দেখে যাচ্ছে , একগাদা পুলিশ জটলা , মাঝখানে আমি কুতুব রমনা থানার গাড়িটা আসার পর ঠিক হলো , আমি -রমনা থানার এস. আই ড্রাইভারের পাশে বসে পুরা এলাকা চককর দিব এরা এডিক্টেড , কোথাও বসে মাল টানার সময় যদি ধরা যায় ওরা আমাদের মত অত বেকুব না , অনেকক্ষণ ঘোরাঘুরি করে ও পাই নাই

রাত দশটায় গেলাম রমনা থানা , জি.ডি করব এর আগে একবার জি.ডি করছি, কিন্তু বছর দুই আগে আমি ফরম্যাট তৈরী করে ওখানে যার টেবিলে বসে লিখতেছি তারে দেখাইলাম ওরা পছন্দ করে ওদের কাছ থেকে ইনসট্রাকশন নিয়ে লিখাআমি ইনসট্রাকশন নিই নাই বলে , এই শালা মনে হয় ক্ষেপে গিয়ে খেকঁশিয়ালের মত করে উঠল ,

''আপনারা ঢাকা র্ভাসিটিতে পড়েন, জানেন না , কেমনে লিখতে হয় '

আমরা যেন জি.ডি লিখা শিখি র্ভাসিটিতে

যদিও আমার লিখাটা ঠিক ছিল , ওটাই নিয়েছে শেষ র্পযন্ত

কোন কিছুই আর পাইনি

** যারা পড়বেন তাদের অনুরোধ করবো, ছিনতাই এর পরের অনুভূতি দু কথায় লিখতে

=======================================

২৪ শে মে ২০০৬

সন্ধ্যা ৭:১১

কলাম্বিয়া

একটি আস্ত ছিনতাইয়ের মস্ত বিবরণী -১

মিন্টু রোডে সি.এ.জি. এর বাসায় টিউশনি করানোর পর বেরিয়েছি

ভি. আই.পি রোড পার হলাম, গন্তব্য নাহার প্লাজা, পেনড্রাইভ কিনবমার্স্টাস থিসিস চলছে , পকেট র্ভতি ডাটা নিয়ে ঘুরতে হয়যাই হোক , পরীবাগ নাহার প্লাজার পিছনে যে নতুন রাস্তা হয়েছে ওটাতে হাটছি হালকা বৃষ্টি হয়ে ছিল আকাশ গোমড়া ,রাস্তা ভেজা আর আমি উদাসী

হঠাৎ চারটা ছেলে ঘিরে ধরল , একজন ডান হাতের কব্জি শক্ত করে ধরে রেখেছে হাত একটু একটু কাঁপছিল , অনায়াসেই বলা যায় ড্রাগ এডিক্ট

'এই ধাককা দিলেন ক্যা, দেইখা চলতে পারেন না ? রংবাজী করেন ?

আমার মনে তখন রং ছিলোনা যে , রংবাজী করবো মনটা বরং একটু

তরল ছিল ' ভাই আমিতো আপনাকে ধাককা দিই নাই , তবুও যদি আপনি ধাককা খেয়ে থাকেন সরি '

'ঐ মিয়া হোনেন একটু আগে এইহানে একটা গেনজাম হইচে আর করবার চাইতাছি না

কথাটা বলে সে আমার হাত তার কোমরে নিয়া ঠেকালো একটা অবয়বের উপর হাত বুলায়ে দিলো পরম মমতায় ঐ বস্তুটা হচ্ছে জিনিস ' আপনের কাচে লাখ টেকা থাকলে ও নিমু না, এক কাম করেন পোলাপাইন মিষ্টি খাইবো , পাচশো টাকা দেন ' আমার তখন ফেলো কড়ি মাখো লাউয়ের জুস টাইপ অবস্থাইনকাম এর মেজর র্পাট ২০০০ টাকা মানিব্যাগে , পেনড্রাইভ কেনার জন্য জিন্সের পকেটে মোবাইল আমি মনে মেন তখন জিকির করতাছি , এই মোবাইল হালায় চিৎকার না করলে হয় অন্তত ও বাঁচবে উপায় নাই তাই ভাবলাম কথা বলে দেখি কি হয় , আমার এক দোস্ত একবার এক ছিনতাইকারীর সাথে দোস্তি করে ফেলছিল কারণ দুইজনেই গিলে , কেমনে মিশায় এইসব আলোচনা থেকে দোস্তি আমি বললাম চলেন সামনে ভাল দোকান আছে , একসাথে সবাই মিলে মিষ্টি খাই আমার দিকে এমন ভাবে তাকাইল মনে হল যেন , আমি এ.টি. এম শামসুজ্জামান নায়িকা নিয়ে পালাচ্ছি ' আমাগো পনের জন পোলাপাইন আছে , দেন টেকা দেন 'আমি মানিব্যাগ বের করে একটা ৫০০ টাকার নোট দিলাম ওদের আরেকজন টান মেরে মানিব্যাগ নিয়ে বাকী তিনটা নোট নিয়ে নিল খুচরা টাকা নে নাই , কি মহানুভবতা কেমনে জনি একজন বুঝছে পকেটে মোবাইল আছে , নিয়ে নিল মোবাইলটা সবে ঋণ মুক্ত স্বাধীন জীবন উপভোগ করা শুরু করেছিল আমি পিছন পিছন এক দৌড় দিয়ে গিয়ে বললাম , সিম র্কাড তো আপনাদের কাজে আসবে না হুদা কমে আমার ৫৭৫ টাকা বরবাদ কেন দিবেন ? দিয়া দেন ' যানগা এইদিকে আর আইসেন না ' আমি আসছিলাম সেদিন সন্ধ্যায় আবার আসছিলাম , সেবার আসছিলাম পুলিশ নিয়ে যাক সে কান্ড পরে বলবো

(চলবে) ====================================

২৪শে মে , ২০০৬

সকাল ৮:৩০

কলাম্বিয়া