Mar 26, 2007

বিকিয়ে যাওয়া ঈশ্বর


.

তখন ছিলাম থার্ড ইয়ারে। জীবনযাপন নিয়ে খুব বেশী ভাবিত নই। টিউশানি আছে মাসের শেষে টাকা আসবে। তিন মাস টিউশানি না করার নিশ্চয়তা ব্যাংকে রেখেছি। বেশ সুখী জীবন বলা চলে নিশ্চিতভাবেই এটাকে। খাই , ঘুমাই , ক্লাস করি। সকালে কার্জন হল দিয়ে শুরু, দুপুরে মধু , বিকালে শাহবাগ, সন্ধ্যায় টিএসসি হয়ে রাতে ঈশা খাঁ রোডে গপ্পোবাজির সীমানা।

এরকম একটা দিনে সন্ধ্যায় রুনু মুখার্জীর বংশীবাদন শুনতে যাদুঘরে ঢুকেছি, ঢুকার সময় বেশ চেক আপ হল, বুঝলাম না। অনুষ্ঠান শেষে বের হয়ে দেখি চারিদিকে একটা গুমোট ভাব। পরদিন চট্টগ্রাম যাবো, তাড়াতাড়ি ঘর মুখো হলাম। ঘর থেকে সরাসরি বাস স্টেশন।

আমার চট্টগ্রামের বাসায় খবর দেখবার বাতিক আছে। তখনো বিবিসির শাসন চলছে টিভিতে। বড়ভাই পারলে দুইচোখের একটা দিয়ে বিবিসি আর একটা দিয়ে সিএনএন দেখে। বাসায় সকালে পৌঁছেই খবরটা দেখলাম। টুইন টাওয়ার স্ম্যাশড টু গ্রাউন্ড।

এক লহমায় বিশ্বরাজনীতির নতুন পাতা শুরু হল। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। নিউইর্য়ক এর গ্রাউন্ড জিরো থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ জগন্নাথ পাঁড় পর্যন্ত পৌঁছোলো।


.

সত্তর দশকের শেষদিকে পাকিস্তান বর্ডারে করা মাদ্রাসাগুলোর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য আরো বিশ বছর বাদে
আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের মধ্য দিয়ে আমরা দেখলাম।


.

বাংলা ভাইয়ের ফাঁসি হবে। আমি খুব একটা আনন্দিত নই এই খবরটায়। ব্যক্তিগতভাবে আমি মৃত্যুদন্ডের বিরোধী। আরো ঘোর বিরোধী আমি অপরাধীর ফাঁসির মধ্য দিয়ে পাপের চিহ্ন মুছবার প্রক্রিয়ার। কারণ আমার খুব সাধারণ মস্তিষ্ক বলে, দেশের পাঁচশো জায়গায় একই সময়ে বোমা বিস্ফোরণ করানোর মত সামর্থ্যে বাংলাদেশের হাতে গোনা কয়েকটি সংগঠনের আছে। তার মধ্যে কোনো নাবালক সংগঠন নেই। কিন্তু এক নাবালকের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে, ঘাগুরা পর্দার আড়ালে ইতিমধ্যে চলে গেছে।


.

আগামী শনিবার বাংলাদেশ-ইন্ডিয়ার খেলা দেখবো। আমাদের নার্ভ টানটান হয়ে থাকবে খেলার প্রতিটি মূহুর্ত।

বউবাজার বস্তি আগুনে পুড়ে গেল। টানবাজার উচ্ছেদ হয়ে গেল সেই কবে। সোনারগাঁওয়ের বস্তিটা উন্নয়নের মডেল হিসেবে আরো কিছু কাল থাকবে।

বিশেষ বাহিনী আরো কিছু রাজনীতিবিদ ধরবেন। বছর তিনেক বাদে সামরিক-বেসামরিক, গৃহপালিত-বন্য মিলিয়ে শ-তিনেক রাজনীতিবিদের সংসদ ভবন ভর্তি থাকবে। নতুন ফাইটার জেট কিনবার জন্য তারা কাড়ি কাড়ি টাকা বরাদ্দ দেবেন।


.

আমাদের ছাপোষা জীবনে ঈশ্বর তার অসীম ক্ষমতা নিয়ে সবসময়ই থাকবেন। স্টিফেন হকিং অসীম ঘনত্বের মটর দানা সদৃশ সৃষ্টিরহস্যের কথা যতই বলুন, ঈশ্বর সপ্তর্ষীমন্ডলের চেয়ে ও বেশী উজ্জ্বলতায় আমাদের আকাশে থাকবেন।

.

এই ঈশ্বর আমার নয়,
কখনোই বোধকরি ছিলেন না
চড়া দামে বিকিয়ে যাওয়া
এই ঈশ্বরের দিকে এক দলা থুতু দিই
।।



ছবিসূত্রঃ Post Secret



দন্ডিত অপুরুষ



দন্ডিত অপুরুষ তুমি


সিগারেটের ছাই ঝাড়তে ঝাড়তে নিশ্ছিদ্র কোণে একটা দমকা হাসি দেয় সাদাত।
তীব্রতম অনুরাগও মাঝে মাঝে যাতনার; ততখানিই যাতনা , যতখানি ফুটোহীন ড্রামের।
কল্পনা করো শুভ্রা, একটা ফুটোহীন ড্রাম যে চাইছে সব উপুড় করে ফেলে দিতে, কিন্তু পারছে না। কারণ তার কোন ফুটো নেই। উগরে দেওয়ার সমস্ত বাসনা নিয়ে নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকা ছাড়া তেমন কিছু করবার নেই।

ভালবাসা যখন চারদেয়াল হয়ে যায়
দেয়ালের ভেতরের মানুষগুলো আমি, তুমি, নন্দিনী,শুভংকর
আমরা সবাই একটা ফুটোবিহীন ড্রামে পরিণত হই।
আমাদের মধ্যকার দুরত্ব যখন আণবিক হয়ে যায়
তখন বিকর্ষণ ও থাকে, আকর্ষণের সাথে ;

খুব ক্লিশে শোনায়, তাই না শুভ্রা।

অনেকবার চেষ্টা করেও যেটা পারেনি, আজ সেটা সফল হবে আশা করাটা বোকামী। তবুও চেষ্টা করল সাদাত ধোঁয়ার রিং তৈরি করতে। নাম না জানা এক দেশের মানচিত্র হয়ে গেল ধোঁয়ারা।

সিগারেটের ধোঁয়া কখনোই ভালো লাগে না শুভ্রার, অসহ্য ও লাগে না। অনেকটা মাঝামাঝি ব্যাপার। গ্যালিলিও চার ডিগ্রি কোণে দুলে ওঠা পেন্ডুলামের মত। কিন্তু সিগারেট শেষ হয়ে যাওয়ার পর যে গন্ধটা লেগে থাকে ওর শরীরে সেটায় নেশা হয় শুভ্রার। এটা কেউ জানে না।


হঠাৎ সম্বিৎ ফিরে পায়। রাজ্যের বিরক্তি এসে ভর করে, মেজাজ অষ্টমে চড়বার সব ব্যবস্থা করছে সাদাত। দেরী হয়ে যাচ্ছে ওর কোন হুঁশ নেই। ওদিকে মা বসে আছে একগাদা কাজ নিয়ে, আজ রাতে বাসায় খালা আসবে। বলতে শুরু করলে ছেলেটা আর থামেই না। এখন সম্পর্কের দূরত্ব নির্ণয় করছে, আণবিক স্কেলে। ভালবাসা না কি দেয়াল হয়ে যায়। হোক, হলেতো ভালোই। চমৎকার একটা বাড়ী করা যাবে। ভালবাসাকুঞ্জ। ওকে এখন জিজ্ঞাসা করা যায়, '' আচ্ছা, ভালবাসায় কি ছাদ হয় ? ''


বিরক্ত হবে , কিন্তু ভাব করবে হতভম্ভ হয়ে গেছে। বিরক্তিটা দেখাতে চায় না। শুভ্রা প্রায়ই এই কাজটা করে, অভ্যাসবশত অন্যমনস্ক হয়ে যায়। সাদাতের কথার মাঝখানেই এরকম দেয়াল, চারদেয়াল, ছাদ ,বাড়ী, সংসার, বাজার, কাঁথা, বালিশ সব ঘুরে এসে , হঠাৎ খেয়াল করে বাস গাবতলীতেই। স্টার্ট নেয়নি এখনো।

'' শুভ্রা ? ''

আবার সম্বিৎ ফিরে পায় শুভ্রা। হড়বড় করে বলে ওঠে, '' রিকশা ঠিক করতে হবে, দেরী হয়ে গেল। ''

সাদাত এবার আর রিং তৈরি করবার চেষ্টা করল না, একগাল ধোঁয়া এবার কোন চেষ্টার অভাবেই আরো একটা নাম না জানা দেশের মানচিত্র হয়ে চলে গেল সুদূরে।।


ছবিঃ Hand of Good, Auguste Rodin


Mar 22, 2007

টুকিটাকি

ভাবলাম শুয়ে শুয়ে একটু পড়ব। মন বলছে একটা ছবি এঁকে ফেল। এখন লিখছি। কেনো লিখি মাঝে মাঝে নিজেই বুঝি না। স্ট্রেস রিলিফের একটা কৌশল এই লেখাঝোকা। সারাদিন আজ কাজের মাঝে মাঝে কি যেন ভাবলাম। অনেকদিন কোন পাহাড়ে যাই না, সমুদ্রেও যাওয়া হয় না। কাজটা অন্যায় হচ্ছে। নিজের সাথে এবং পাহাড়-সমুদ্রের সাথে। আমার সান্নিধ্যে বঞ্চিত হচ্ছে ওরা। কাল আবার জুমা বার। হাতে একগাদা কাজ। কাল পোলো রোড পার্কে নিমন্ত্রণ। কিভাবে যেন ঝড়ের বেগে সময় পার হয়ে যাচ্ছে।

Mar 17, 2007

নতুন স্লোগানঃ এসো সব ডোরাকাটা মিলে নির্মাণ করি 'এল ডোরাডো'



আজ বাংলাদেশ যেটা করলো সেটা একটা ইতিহাস। ১৭ই মার্চ ২০০৭। এতদিন প্রেস, মিডিয়া,কমেন্টেটর সবাই বাংলাদেশ কে নিয়ে খেলতো। টিভি স্ক্রিনে বসা সেট ম্যাক্স এবং ইএসপিএন এর কমেন্টেটররা বলার কিছু খুঁজে না পেলে বাংলাদেশকে এক পশলা দেখে নিতেন। এটা অনেকটা কার্ড শাফল করবার মত একটা কাজ হয়ে গেয়েছিল তাদের। কাজ নাই তো খই ভাজ। এবার সেটার একটা দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিল আমার দেশ। বাংলাদেশ খেললো এবং খেলালো। আস্তে আস্তে খেলিয়ে খেলিয়ে বড় মাছ নৌকোয় তুললো বাংলাদেশ। সাবাশ ডোরাকাটা বাঘের দল।

টেস্ট স্ট্যাটাস পাবার পর সব দেশেই বাংলাদেশ একটা টেস্ট সিরিজ খেলেছে। হোক না তা দু টেস্টের , তবুও খেলেছে। এই যে এত অহমিকা এবং দম্ভপূর্ণ অস্ট্রেলিয়া, তারাও টেস্ট সিরিজ খেলেছে। তারা বলেছে বাংলাদেশের উন্নয়নে তারা হাত বাড়াবে, কথা রেখেছে। কিন্তু ভারত সেটা পারেনি, কারণ টাইগাররা গেলে ট্যাঁক ভারী হবে না।

একসময় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে ব্রাত্য করে রাখত ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মত দেশগুলো। এখন দক্ষিণ এশিয়াতেই আবার একটা শ্রেণী বৈষম্য চালু করেছে, অর্থনৈতিক দানব ভারত।

বোঝো এবার ল্যাঠা।

আজ থেকে দিচ্ছি নতুন স্লোগান ''এসো সব ডোরাকাটা মিলে নির্মাণ করি স্বপ্নের এল ডোরাডো ''।।

Mar 6, 2007

তিরিক্ষি মেজাজ


মাঝে মাঝে মেজাজ এত খিঁচড়ে যায়। আজ সন্ধ্যায় এসে চা বানালাম, ঝালচানাচুর। এখন লিখতে বসবার পর তালু কিছূটা ঠান্ডা হওয়া শুরু করেছে।
অসহ্য রকম মেজাজ বিগড়ে গিয়েছিল আজ। ভনিতা, প্রতারণা কিংবা ছেনালীপনা এই তিনটা একদম নিতে পারিনা। মাস ফ্লো কন্ট্রোলার একটা ফস্টিনষ্টি করছিল, সেটা একটা কারণ। কিন্তু এই মাগীর জন্য এটা নতুন কিছু না। কোলে তুলে সোহাগ করলেও দুদিন বাদে গাল ফুলিয়ে বসে থাকে, কোন কারণ ছাড়া। কিংবা কারণ এখনো আমি জানি না। তবে শুধু এটাই কারণ না, মেজাজ তিরিক্ষি হবার। আরো কিছু আছে। কেউ একজন নাটক করছে, আমি অনুভব করছি। আমার মেজাজ সেটার ফিডব্যাক দিচ্ছে। যদিও আমার চেতন মন সেরকম কোন কিছু শনাক্ত করছে না।

দেখা যাক কি হয়। এখনতো ঠান্ডা হলো অন্তত।

Mar 4, 2007

সাবাশ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

অনেকদিন পর গা ঝাড়া দিয়ে জেগে উঠেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। বেশ কয়েক বছর যাবৎ তারা এই প্রক্রিয়াটা চালু করেছে কিন্তু সত্যিকার নজরে আসল এইবার। একটা বড় পেটমোটা মাছ বড়শীতে পড়বার পর। ব্রাভো চবি।

ফেল করা একজন ছাত্র দেশের সর্বোচ্চ আদালতে গিয়ে বিচারকার্য করবে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদিতে অংশগ্রহণ করবে ভাবতেই গা গুলায়। ভূল বুঝবার কোন অবকাশ নেই এখানে। একজন ছাত্রের ফেল করা নিয়ে আমার কোন উন্নাসিকতা নেই, কিন্তু ফেল করে জালিয়াতি করে পাশের সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার বিষয়ে আমার তীব্র অনীহা আছে।

আমি এটা
ভাবতেই শিউরে উঠতাম যে এই বিচারক একদিন প্রধান বিচারপতি হবে, নাইকো'র ক্ষতিপূরণ মামলা চালাবে, এমপি'র আদালত অবমাননার মামলা চালাবে, দেশে ও জাতি নিয়ে বক্তব্য ঝাড়বে এবং লোকজন সেটা বিশ্বাস করবে। আমি ভাবি এবং আমার গায়ে কাঁটা দেয় একধরণের শীতল অনুভূতি।

আমাদের সরকার সমর্থিত ভিসি'রা এরকম অনেক কুকর্ম
সমর্থন করেন। আমার নিজের চোখে দেখা, কিভাবে ফেলু ক্যাডার কে পাসের লিস্টে নাম তোলা হয়। কিভাবে নির্বাচন কমিশনে দলীয় ক্যাডারদের নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নষ্ট যুগের অবসান বড় দরকার হয়ে পড়েছে।

আমার সময়ের সেরা ছাত্রদের দেখেছি সরকারী চাকরীতে কি তীব্র অনীহা। কেউ বেতন ভাতার কারণে, কেউ মামা নেই ঢুকতে পারবে না বলে, কেউ অবচেতন আরোপিত ঘুষ নিতে হবে বলে। অথচ এরকম হওয়ার কথা ছিল না। দেশের সেরা ছাত্ররা দেশের সেরা জায়গায় যাওয়ার তীব্র প্রতিদন্দ্বীতা করবে এরকম হবার কথা। অথচ হয়নি। দেশের প্রতিটি নির্বাচিত সরকার দলীয় দালালদের দিয়ে প্রশাসনের দলীয়করণ করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার জন্য দলীয় তকমা, ধর্মীয় তকমা, সর্বোপরি মেধাহীন তকমাটা প্রধান হয়ে গিয়েছে। গত দশ বছরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়জন নন-জামাত তকমার ছাত্র শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে সেটা পরিসংখ্যানের বিষয়; বোধকরি বাংলাদেশের জন্মহারের চেয়েও কম হবে এই সংখ্যা।

আমার খুব ইচ্ছা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়জন
নন-মুসলিম নিয়োগ পেয়েছে সেটা জানতে। এই সংখ্যা আমাদেরকে একটা রেসিস্ট জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য যথেষ্ট হবে বলে মনে হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে দেখি এক ধরণের পরিবারতন্ত্র জেঁকে বসছে। অমুক স্যারের ছেলে, ভাতিজা এখন শিক্ষক। এই পরিস্থিতি বেশ কয়েকটা ডিপার্টমেন্টে। একটা পরিবারেই সব মেধা কি সঞ্চিত হতে পারে? এ আমার কাছে এক বিস্ময়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে ঝেড়ে কাশবার দরকার এখন। সরকারী কর্ম কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যানদের কাঠগড়ায় দাঁড়া করানোর দরকার। এভাবে চলতে পারেনা একটা দেশ, একটা শিক্ষা ব্যবস্থা।

Mar 2, 2007

কুকুর কাহিনীঃ দে দৌড়


পেন্নাম, হিমুর কুত্তা সমাচার পড়ে কুকুর নিয়া, এক পশলা লিখতে ইচ্ছা হল।

লোকে কুত্তার বাচ্চা গালিটা কেন দেয় বুঝা দুষ্কর।আমার কুকুর অভিজ্ঞতা বড়ই সুখকর। নিজে কখনো কুকুর পুষি নাই। গুল মোহাম্মদ যে কারণে পোষে না সে কারণে। তবে কুকুর প্রানীটা বরাবরই ভালো লাগে।

ক.

জন্মের পর থেকেই বিষয়টা এরকম ছিল তা না। আমার বয়স তখন ৬, দেখতে একই রকম আমার ভাইয়ের বয়স ৭.৫। নানা বাড়ীতে, কাঁঠাল গাছের পিছনে, খড়ের গাদায় উঁকি-ঝুঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করছি। কুকুরী চারটা বাচ্চা দিয়েছে। বিপুল আগ্রহের পরিসমাপ্তি ঘটল যখন মা কুকুর গা ঝাড়া দিয়ে উটকো আনন্দে ট্যাক্স বসিয়ে দিল। আমি আমার স্বভাব সুলভ ফিচকেমি দিয়ে পার, বদ্দা একাই ট্যাক্স পে করল দুইজনের। অথচ সামনে ছিলাম আমি, কামড়টা আমার খাওয়ার কথা।

খ.

এরপরের আরেকটা উল্লেখযোগ্য ঘটনা, তখন পড়ি ক্লাস সেভেন কি এইটে। পহেলা বৈশাখের বিকেল, ডি. সি হিল জুড়ে চলছে ছবি আঁকা কম্পিটিশন।

তার একটু আগেই বুইজ্জার গিরা (বুড়া মানুষের জয়েন্ট) নামক একটা মাঠে গিয়েছি আমি আর আমার দোস্ত তানসেন। ও সেতার না বাজালেও বারান্দার গ্রিল ধরে ঝুলে '' র্পূব দিগন্তে র্সূয উঠেছে'' ধরনের অনুপ্রেরনাদায়ক গান গাওয়ায় পারর্দশী ছিল।

বুইজ্জার গিরা আসলে পারসোনাল প্রর্পাটি। আমরা খবর পেয়েছি ওখানে খুব ভাল মরিচের চারা পাওয়া যাবে। যেই কথা সেই কাজ, স্লোপ বেয়ে নেমে গেলাম। ঘুরে দেখছি এই সময় হঠাৎ, আগ্রাসী তৎপরতা নিয়ে হাজির একটা কুকুর। জীবনে এই একবারই আমি কুকুর দেখে ভয় পেয়েছি। দে ছুট, ১০০ মিটারে রের্কড করছি দুই বন্ধু কম্পিটিশন দিয়ে। গেটের কাছে এসে, দুইজন দুই দিকে চলে গেলাম, কুকুর বেচারা বিভ্রান্ত হয়ে আর ধাওয়া করলো না।

গ.

বাদবাকী প্রত্যেক বারই যেখানে যে কুকুরের পাশ দিয়ে হেঁটে গেছি, কোনো এক অজানা কারণে আমাকে পছন্দ করে ফেলে কুকুর গুলো। পিছু নেওয়া শুরু করে। কে জানে আমার মধ্যে ওরা গুল মোহাম্মদের প্রতিভা দেখতে পায় কি না?

বড়ই বিচিত্র প্রানী।