অভিযোজন
ক্রিসমাসের ছুটি শুরু হয়ে গেছে , এখন ক্যাম্পাসে পাতা ঝরার আওয়াজ ও স্পষ্ট শোনা যায়। যদিও সারা বছর চার দেয়ালের মধ্যে কাটানো হয়, বাইরে খুব বেশী যাওয়া হয় না। তবুও ক্যাম্পাসের এই ফাঁকা ভাবটা অসহ্য লাগে। এর মধ্যে যদি দেখা যায় রুমমেট চলে গেছে অন্য কোথাও তখন আরো খারাপ লাগে। মানুষের সম্পর্কের সূতো গুলি খুব টানটান। যার সাথে গোটা সপ্তাহে সত্তুর মিনিট কথা হয় না, তার অনুপস্থিতিও খুব বাজে। প্রবাস শব্দটাকে মেলে ধরলে হবে ‘প্রকৃষ্ট যে বসবাস’। এই লাইনটা প্রবাস শব্দটাকে মোটেই ধারণ করে না। প্রবাস অনেক বেশী নির্জন এবং শীতল শব্দ।
পরিবারের বাইরে থাকার অভিজ্ঞতা অনেক পুরোনো। সেটাও অনেকটা একা থাকার সময়। কিন্তু সে সময়টা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক সময়। ভীষণ স্বর্ণালী সময়। পরিবারের কাছ থেকে দূরে থাকলেও একা থাকা হয়নি। দেশের বাইরে
সবচেয়ে খারাপ যে বিষয়টা আমার লেগেছিলো প্রথম সেটা হচ্ছে, তীব্র অপরিচিত একটা পরিবেশ। চারিদিকে এত সবুজ, অথচ এ সবুজ যেন আমার নয়। একটা গাছের নাম জানিনা। একটা পাখির নাম জানিনা। আমি যেখানে থাকি সেটা ভীষণ
সবুজে ভরপুর একটা জায়গা, অথচ এই সবুজ মনে কোন দ্যেতনা সৃষ্টি করেনা। আস্তে আস্তে বিষয়গুলো কেটে যায়, অভিযোজিত হয়ে পড়ি। কোথায় যেন ঠিকই একটা কিন্তু থেকে যায়।
আমাদের জীবনের সেরা সময়গুলো আমরা অভিযোজন প্রক্রিয়ায় কাটিয়ে দিই। এক সময় আবিষ্কার করি আমরা অভিযোজনের অপর নামই জীবন ধরে নিয়েছি।
No comments:
Post a Comment