একটি শালীন নৃত্য
গতকাল  অমুক  ভাইয়ের ছেলের গায়ে হলুদে  গিয়েছি। আমেরিকায়  বাংলাদেশী  প্রোগ্রাম, এলাহী   ব্যাপার। আর  আমার মত  নাদানের জন্য তো কথাই নেই। বাংলাদেশী  ছেলের সাথে ইন্ডিয়ান মেয়ের বিয়ে। মালটিকালচারাল শো। একটা বাংলা গানতো তিনটা হিন্দি  গান। একজন  রবীন্দ্র সংগীত  গাইল, আমার পাশে রাশেদ ঘুমায় আরকি। আমাদের ছাত্ররা  ''যমুনার জল দেখতে  কালো '' অনেক অনুরোধেও  গায়েন কি দিয়ে গাওয়াতে পারলেন না। বেচারার দোষ কি মিডি ফাইল না  থাকলে  কি করবে বেচারা।  হিন্দি গান গিলতে গিলতে দেখি ঘোষণা  হল অমুক নাচবে  '' কাজরা  রে '' ঢংয়ে । ঐশ্বরিয়ার  সুপারহিট   গানা। 
যে মেয়েটি  নাচবে তার  বয়স বেশি হবে না। এই  সম্ভবত  ২২-২৫ । ওর জামাইটি ২৬-২৭ । বেশ  অমায়িক এবং  ভাল ছেলে।  বিয়ের বয়েস  এখনো হয়তো  দু বছর  হয়নি।  বাচ্চার  নতুন  খেলনা  পেলে  যেমন চার্ম থাকে,এই বয়সের বিয়েতেও সেটা থাকে। একই সাথে  সারা দিন থাকে । তবুও কোথাও  বেড়াতে গেলে দূর থেকে   এক  পলকের ভালবাসা বিনিময়  চোখে চোখে। এমন একটা  সময় যখন  প্রিয়  মানুষের থুথু ফেলার  স্টাইল টাও  মনে হয় অভিনব।  যাই  হোক  মেয়েটা  নাচতে  আসল। '' ম্যানে  কলিজা  রাখ  দিয়া .....''  বলা মাত্র , যে রকম একটা  ঝাঁকানি  দিলেন। যাই হোক ওর  চোখ  পড়ে  আমি নিশ্চিত  ছিলাম,   এই  নাচটা  দিচ্ছিল ওর  জামাই বাবাজি  কে  উদ্দেশ্য  করে। এটা তাদের  একান্ত রোমান্স, আমরা সে  বিষয়ে  না যাই। 
বিষয়টা  হচ্ছে র্দশক  নিয়ে। আমি বেল্লিক মানুষ। পৃ থিবীতে   খুব কম  বিষয়  আছে  যেটাতে  আমার  রুচি নেই। কথা  হচ্ছে  তাদের  নিয়ে  যারা  অতি  অল্পতেই  দেশ রসাতলে গেল, সব বরবাদ গেল  তাদের  নিয়ে। একটু আগে  এশার  নামাজ  পড়া নিয়ে তোড়জোড়  করলেন। নামাজ  কে ক্রিটিসাইজ  করার  জন্য  বলছি না। আমি কেন   নামাজ  পড়ি না এ নিয়ে তারা  ইতিমধ্যে  অভিসর্ন্দভ  নামিয়ে  ফেলেছেন। আজকে একজন বললেন  তোমার  মোরালিটি নাই, তুমি নামাজ পড়না পাঁচ ওয়াক্ত । যৌবনের তেজ স্থৈর্যও শিখিয়েছে , তাই  কিছু বলিনি। ওরা  মোরালিটি  ডিপ ফ্রিজে  রাখে। যখন  খুল্লাম খুল্লা দেখার দরকার হয় তখন ডিপ  ফ্রিজ। যখন  দরকার বের করে চেখে  নেয়,  আবার ফ্রিজে।  বুফে তে  গেলে  হুংকার  দিয়ে  দেখিয়ে  দেয়,  এটা  শুকরের  মাংস। কে কার আগে দেখাতে  পারে ,  তাহলেই  তো  প্রমাণ  হয়ে গেল আমি  পাককা  মুসলিম।   
যা বলছিলাম নাচ,  সবাই  দেখছে  একটি মানসিক নাবালিকা  নিজেকে  উপস্থাপন করছে,  সবাই  হাততালি দিচ্ছে । সকল পেশা  এবং  শ্রেনীর  এবং  সকল বয়সের  মানুষ আছে। এর  মধ্যে  আবার  অনেকেই  আছে  যারা  ভীষণ  চিন্তিত  হয়ে  পড়ে, ইরাকে  কি হবে ভেবে ,  আমি  নামাজ পড়ি না ভেবে, দেশে  ইন্ডিয়ান  সংস্কৃতির  আগ্রাসনের  কথা ভেবে ।
এই  হচ্ছে  আমাদের  শালীনতা, পরের বউ খেমটা নাচ দিলে  অসুবিধা  নাই , নিজের বউ ঘোমটা দিতে হবে।
রিকশা  করে   রাজমণির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আড়চোখে একটু দেখতে হবে ময়ূরীকে।কিন্তু ইউনির্ভাসিটি  গিয়ে  ফতুয়া আর জিন্স পরা মেয়ে দেখলে বলতে হবে, রেপ হবে না  কেন আগ বাড়িয়ে বুক দেখাচ্ছে। এই  হচ্ছে আমাদের হোম মেইড   শালীনতা।   
No comments:
Post a Comment