পৌণঃপুনিক জীবন
নতুন ডেরায়  আর্ন্তজাল  সংযোগ  দেওয়া সম্ভব  হচ্ছে না বিধায়   দুঃখ প্রকাশ  করেছেন  রমজানীয়  ঘোমটা দেওয়া  পাঠিকা। অদ্য  হইতে  তিন  সপ্তাহের  মধ্যে   আপনার  মধ্যযুগীয় ডেরায়   উওরাধুনিক   ওয়্যারিং  করা  হইবে।  তদ্যবধি   আবহাওয়া  সংবাদ দেখুন। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, বরিশাল,  দিনাজপুর, রংপুর , কুষ্টিয়া, পাবনা  ইত্যাদি   বিভাগীয় এবং  হবু বিভাগীয়  শহরে  রোদ-বৃষ্টি-বজ্র সহ বৃষ্টি-বজ্র আঁটুনি  ফসকা গেরোবৃষ্টি- দমকা-হালকা- দুলকি- ক্যাটওয়াক  সহ নানাবিধ  চালে  হাওয়া আসতে পারে । বিভিন্ন শহরের  তাপমাত্রা  বিভিন্ন রকম  তাই  ১-১০০ সব  তাপমাত্রাই   দিকে দিকে  দেখা দিতে  পারে।  উন্নয়নের  জোয়ার এই  সরকার আসার সময় যেটা  শুরু হয়েছিল সেটা এখনো  প্রবল বেগে  চলছে। থামাথামির  কোন  নাম নেই।  নাম আগে  যা ছিল  সব পালটে  দেওয়া হয়েছে , কোথাও  কোন নাম  কুনা কানচিতে  বাদ পড়লে  আওয়াজ পাড়বেন তৎক্ষণাৎ   পালটে  দেওয়া  হবে।  আমাদের দুই   ফটকাবাজ  নেতা   সংলাপ নামক  মালকা-মালকিতে  ব্যস্ত  আছেন। দেশব্যপী    তড়িৎবিপ্লবের  নেতৃত্ব  দেওয়া,   জনগণের  পাছা  আংগুল  দিয়ে   বহাল তবিয়তে  ইফতার  আলাপন করে যাচ্ছেন আপা-দুলাভাইরা। সবাই  ব্যস্ত   সামনের  খেলার সূচী  নিয়ে। খেলা  দিবারাত্রি  হবে  নাকি  আধোরাত্রি ?  কে রেফারী  হবে ? কে হবে  লাইন্সম্যান ?  কে হবে  ম্যাচরেফারী  ?   
জনগণ  চনা  কিনতে গেলে  ডাল কিনতে পারেনা।  খেজুরের দাম  শুনলে মনে হয়  বেহেশতি  খেজুর  দুনিয়াতে  আইসা পড়ছে।  চালের দাম তরতরিয়ে  উঠে গেছে  গাছের আগায়।   
বাজারে  পাকিস্তানী  লেহেংগা আর ইন্ডিয়ান শাড়ী-পানজাবী  আসা  শুরু  হয়েছে।  আমাদের  দেশ  উদ্ধার করা দৈনিক  গুলোর   প্রথম  পাতায়   কোন  বাজারে  ১ লাখ টাকার শাড়ী , কোন  বাজারে  ১.৩০ লাখ টাকার  লেহেংগা  এসছে  খবর দেবে।   পাশের কলামে  আবার  এসিডদগ্ধদের  জন্য   তহবিলের  খবর থাকবে। ঈদ ফ্যাশন  সংখ্যা  বের হবে। নামীদামী রাইটাররা  দুহাতে  লিখে  যাবেন  চাঁন রাত ভর  ঈদ  সংখ্যার জন্য। যার  বেশীরভাগই   ঈদের  চাঁদের মত   আধঘন্টা  বাদে  মনের আকাশ  থেকে  উধাও  হয়ে যাবে।  আহা  আমাদের শিশুরা  তারা  ঈদে পেতে  পারেনা , আনন্দমেলা  পূজার্বাষিকীর   মত  সুললিত  সাহিত্য।  
পত্রিকার  পাতা  ভরা থাকবে  মিসেস সালমা  আর রহিমার   মুখরোচক খাবারের  রেসিপি,  কিন্তু  উপাদানগুলো  আওতার   বাইরে  আকাশের তারার মত ছিনিমিনি   খেলবে।  
এর মধ্যে  বেকুবেরদলা  প্রেসিডেন্ট  ঈদেরদিন  জনগণের সাথে  করর্মদন  করবেন   সারাদিন। আহা  এই   প্রেসিডেন্ট   পদটা  না থাকলে  বেচারা  গণভবনের   খানসামাদের  এই  কাজটা  করতে হতো।  কি ভালো   প্রেসিডেন্ট ,কি অবলীলায়  অপ্রয়োজনীয় সব  কাজ   ডুগডুগি  বাজাতে বাজাতে  করেন। 
ঢাকা শিশুর্পাক সেদিন   সবার জন্য   উম্মুক্ত  থাকবে,  পথের শিশুরা  সেমাই এর  খোঁজে   দ্বারে  দ্বারে  ঘুরবে,  শিশুর্পাক  জমজমাট  হবে বুড়োদের  কলরবে।  টিভিতে   আনন্দমেলার  নামে  একটা  উৎকট  স্যুট পরা  লোক  খালি হে হে  করে যাবেন।  বিদেশী  ফুটেজ  দেখাবেন   অনুবাদ  করে, সাথে  নায়ক-নায়িকাদের  কুইজ  কনটেস্ট।  
আমাদের   জনগণ   মাথাপিছু র্কজের  ভারে  নুয়ে যাবেন।  কৃষকেরা  ডিজেলের  হাহাকারে  রোদন  করবেন।  এমপিরা ঈদ  পুর্নমিলনীতে  কোন   নায়িকা  নাচালে   যুবরাজ  খুশি হবে সেটা ভাববেন।  
র্সবোপরি  চাঁদটা  এক  জায়গায়  আটকে থাকবে।  জোয়ারই  জোয়ার। ভাটা  আর আসবে না। নতুন  সরকার এসেই   সদ্যজন্মানো  ভাটাকে ,  পেঁদিয়ে  জোয়ার  বানিয়ে দেবেন।  কিছুদিন পরপর  বলবনে  গত  সরকার দায়ী  ৪৩৩২  পাতার শ্বেতপত্র   বের  হবে।  বিদ্যুৎ  ঘাটতি  মোকাবেলায়  এক চিমটি এখানে লোডশেডিং ,  এক খাবলা ওখানে ,  পুরোটাই  গাপ করে দেবেন  ঢাকার  বাইরে।  কানসাটে  তবুও  মাসের  শেষে  বিদ্যুৎ  বিল যাবে,   প্রতিবাদ  করলে   গুলি ।  এরপর  আমাদের   প্রথম  সারির   লোকজন বলবেন  এসব  ধান্ধাবাজি । আবার   ঈদ আসবে , আবার  লেহেংগা , আবার  চুলের ফিতা , আবার ইলেকশন ।  
লিখা হয়েছিলঃ ৬’ই অক্টোবর, ২০০৬

No comments:
Post a Comment