May 5, 2007

শুভ জন্মদিন



ব্যস্ত একটা দিন পার করলাম গতকাল। একে শুক্রবার, সপ্তাহের শেষ দিন। তার উপর সেমিস্টার শেষের দিন বলা যায়। সকালে পরীক্ষা দিলাম। কি দিলাম শুধু আমি জানি, আমার পেন্সিল জানে। পরীক্ষার জন্য পড়তে হবে এই মানসিকতা একদম গেছে আমার। পড়াই হয় না। তাও দিয়ে এসেছি। অবশ্য প্রজেক্ট প্রেজেন্টেশান খুব ভাল হয়েছে। সুতরাং এ যাত্রা রক্ষা। পরীক্ষার পর যথারীতি বিস্কিট দিয়ে লাঞ্চ করে মসজিদে গিয়েছি। এসে রবার্ট কে নিয়ে এগযসট লাইন নতুন করে বানালাম। ওকে অনেক আগেই মসলাদার খাবার খাওয়াবো বলেছিলাম। আর ওদিকে প্রদীপ্ত এন্ড গং’ রা আমার মিক্সড ভেজিটেবল এর প্রশংসা শুনে বসে আছে খাবার জন্য। তাই ওদের সবাইকে রাতে আমার বাসায় খাওয়ার নিমন্ত্রণ করেছিলাম।

জন্মদিন বিষয়টা কখনোই সেই অর্থে নোটেবল কিছু ছিল না আমার কাছে। কখনো উৎসব করে পালন করিনি। কলেজ ভর্তি হবার পর থেকে বন্ধুরা জন্মদিনে শুভেচ্ছা দিত এইটুকুই। গতবছর জন্মদিনের দিন রুমমেটকে Yesterday রেস্টুরেন্টে খাইয়েছিলাম। বেচারা গত চারদিন আগে জানতে পারলো সেটা ছিল আমার জন্মদিন। খুব আফসোস করছে এখন।

সকালে পরীক্ষার মাঝখানে কল পেলাম শামীমা আক্তার (সম্ভবত। নাম ভুল হলে শামী কাবাব বানাবে আমাকে) সাকী’র। অনেকদিন কল করিনি, কল করলে আমার ত্যাঁদড় হেডফোন এর কারণে কথা ওদিকে শোনা যায় না। এই সব নিয়ে সে দেখলাম বোমা হয়ে আছে। ফোন ধরার পর ‘শুভ জন্মদিন’ বলতে যতক্ষণ লাগে তাই রক্ষা। এরপর শুরু হলো ঝাড়ি। বাপস। আরে দোস্তলোগ এত অল্পে ক্ষেপলে কি চলে ? এখন এই বাবদ আরো মাস ছয়েক যখনই কথা হবে আশা করছি ছোট ছোট কিস্তিতে ঝাড়াঝাড়ি করবে।

নিমন্ত্রণ তো করলাম কিন্তু রক্ষা কে করবে। এগযসট লাইনের কাজ শেষ করে ওয়ালমার্ট, সেখান থেকে বাজার করে বাসায় আসতে আসতে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা। দাওয়াত যখন আমরা খেতে যাই, আমরা জানিও না এর পেছনে কি কর্মযজ্ঞ ছিল। গতকাল সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেলাম। মিক্সড ভেজি এবং চিকেন ভূনা দুটো আইটেম। আমার চুলোয় একটা মাত্র বড় হিটার, বাকী তিনটা ছোট। ফলে একটা একটা আইটেম রান্না করতে হবে। বড় ননস্টিক আছে মাত্র একটা যেটাতে রান্না করতে কমফোর্ট ফিল করি। ফাও পাওয়া গেঞ্জাম হলো ফ্রোজেন চিকেন। বরফ যুগের তিনটে বরফ খন্ড। সালদ করতে গিয়ে দেখি শসা নেই। গাড়ীতে আমার ব্যাগে যে শসা, জুকিনি আছে ভুলেই গেছি। একটা অভিজ্ঞতা বটে। তবে নিমন্ত্রণ বেশ সফল হয়েছে।

তবে যেটা সাধারণত হয়, ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভাঙ্গে। সুতরাং আমার বাসা কোন ছার। আমরা সাতজন একত্র হবার পর গণিত এবং যন্ত্রপরিগণক বাদে, বাকীরা কিছুক্ষণ কোর্স, রিসার্চ, ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে গেঁজানো। এরপর সবাই মিলে যার যার এডভাইজরের শুক্রবাসরীয় গীবত করলাম। আস্তে আস্তে টপিকস সুইচ করলো মার্কিন রাজনীতি, পলিসি, সোভিয়েত, তৃতীয় বিশ্ব কি নেই।


৫’ই মে, ২০০৭

ওয়েস্ট কলাম্বিয়া।